সামান্য ভূমিকম্পেই কোলকাতা চলে যেতে পারে মাটির তলায়

   



সামান্য ভূমিকম্পেই কি কলকাতার হাল হতে পারে ভূজের মত? বিস্তারিত জানালেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের জিওলজিক্যাল সায়েন্সের অধ্যাপক সুবীর মুখোপাধ্যায়।

প্রতিদিন ৫০ বার কেঁপে ওঠে পৃথিবী। কিন্তু আমরা তার কিছুই টের পাই না। সারা বছরে ১৭ হাজারের উপর ভূমিকম্প হচ্ছে তার মধ্যে গড়ে ১৬ থেকে ১৮টা কম্পন ভয়ংকর রূপ নেয়। অর্থাত্‍ রিখটার স্কেলে এই কম্পনমাত্রা ৭-এর উপরে থাকলে তবেই তা ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে। তবে কোনও বছর এর থেকে বেশিও হতে পারে। যেমন ২০১০ সালেই ২৪টা ভয়ংকর ভূমিকম্প হয়েছিল।


 এখানেই শেষ নয়, কম্পনের মাত্রা রিখটার স্কেলে আটের বেশি হলেই তা অতি ভয়ংকর হয়ে ওঠে। তবে কলকাতার জন্য অতটাও প্রয়োজন নেই।

সম্প্রতি গুজরাত (Gujrat) ৫.৫ কম্পনমাত্রায় কেঁপে উঠেছে। এটুকু হলেই ২০০১-এর ভুজের থেকেও খারাপ হাল হবে তিলোত্তমার। এর প্রধান কারণ কলকাতার পরিকল্পনাহীন উন্নয়ন। মাটির তলাটা পুরো ফোঁপরা হয়ে রয়েছে। সিসমোলজিক্যাল মাইক্রোজোনেশন ম্যাপ তৈরি করেছে আইআইটি খড়গপুর। সেখানেই দেখা গিয়েছে এ শহরে ভূগর্ভের জলস্তর অনেক উপরে। সামান্য নিচে রয়েছে নরম পলিমাটি। ভূমিকম্পে মাটির তলায় ঢুকে যেতে পারে পূর্ব কলকাতার বিস্তীর্ণ অংশ। ফলে চরম বিপদের মুখে দক্ষিণ বালিগঞ্জ (Ballyguange), কসবা, গড়িয়াহাট অঞ্চল। ভয়ের খবর রয়েছে আরও। ইন্ডিয়ান প্লেটটা প্রতিবছর ৩.৫ মিলিমিটার করে ধাক্কা মারছে তিব্বত প্লেটের উপর। এর কারণেই একের পর এক ভূমিকম্প। 


ভূ-অভ্যন্তরে যখন একটি শিলা অন্য একটি শিলার উপরে উঠে আসে তখনই কম্পন অনুভূত হয়। এক্ষেত্রে মাথায় রাখতে হবে পৃথিবীর মহাসাগর আর ভূপৃষ্ঠের মধ্যে মিলিয়ে ১৫টা থেকে ১৬টা মেজর প্লেট আছে। এগুলো মাঝেমধ্যেই নড়েচড়ে উঠছে।


আমরা বলি, ভূপৃষ্ঠে আর্থ, মেন্টেল আর ফ্লোর বলে তিনটি অংশ। এর সবচেয়ে উপরের খোসাটাই সবচেয়ে বিপত্তিকর। ভূমিকম্প প্রেডিক্ট করা যায় না। তবে সাধারণত এপিসেন্টার থেকে কিছু দূরেই ক্ষয়ক্ষতিটা বেশি হয়। সেক্ষেত্রে ১০০০ কিলোমিটার দূরের কম্পনের উত্‍সও কলকাতাকে নাড়িয়ে দেবে। মাথায় রাখতে হবে, এখন মিজোরামে যে ভূমিকম্প হচ্ছে তার এপিসেন্টার চম্পাই থেকে আরও ২৭ কিলোমিটার দক্ষিণে। দু'মাস ধরে বিশ্বের রেড এবং অরেঞ্জ জোনগুলিতে আলোড়ন চলছে। সারা পৃথিবীকে পাঁচটি জোনে ভাগ করা হয়েছে। চার নম্বর জোনেই রয়েছে কলকাতা। হিমালয়টা একসময় পুরো সমুদ্রের তলায় ছিল। হিমালয়ের উপরে দেখতে পাওয়া যাচ্ছে মেরিন ফসিল। ক্রমাগত তিব্বত প্লেটের উপর চড়তে শুরু করেছে হিমালয়। সেখানেও একটা কম্পন হচ্ছে। আগামীদিনে এ কারণেই আরও বড় ভূমিকম্প হতে পারে বলেই আশঙ্কা।

                             ~ Geography Organization

Source:- সংবাদ প্রতিদিন


মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আগামী রবিবার দেখা যাবে মহাজাগতিক দৃশ্য 'রিং অফ ফায়ার'

রাজস্থানে আঘাত আনলো উল্কার ধাতব খন্ড?

রাক্ষুসে ব্ল্যাকহোল!! কী-কেনো-কীভাবে?